শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
ইলিশের পরিবর্তে শুঁটকি, সবজি, খিচুড়ি ইত্যাদি খেয়ে পহেলা বৈশাখ পালনের আহবান,প্রধানমন্ত্রীর

ইলিশের পরিবর্তে শুঁটকি, সবজি, খিচুড়ি ইত্যাদি খেয়ে পহেলা বৈশাখ পালনের আহবান,প্রধানমন্ত্রীর

মতিহার বার্তা ডেস্ক : বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রধান উৎসব পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে সমগ্র বাঙালি জাতি এক কাতারে চলে আসে। লাল-সাদা পোশাক, পান্তা ভাত, মঙ্গল শোভা যাত্রা, রমনার বটমূলের ছায়ানটের সঙ্গীতানুষ্ঠান পহেলা বৈশাখকে নতুন রূপদান করেছে। শুধু শহর সমাজেই নয় গ্রাম সমাজেও ঘটা করে পহেলা বৈশাখকে বরন করে নেয়া হয়। একে কেন্দ্র করে জমে মেলা যা বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত। ফলে এটি এখন অন্যতম একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।

গত কয়েকবছর ধরে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা খাওয়ার রেওয়াজ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে পহেলা বৈশাখ কিংবা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সাথে ইলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। পহেলা বৈশাখ যখন ধীরে ধীরে গ্রামীণ সংস্কৃতির পাশাপাশি নগর সংস্কৃতির অংশ হয়ে তখন থেকেই মূলত ইলিশ আর পান্তা ভাতের সংস্কৃতি যুক্ত হয়েছে। যেহেতু বৈশাখ মাস ইলিশের মৌসুম নয়। তাই এসময়টি ইলিশের দাম সবসময় চড়া থাকে। গত কয়েক দশক ধরে ১লা বৈশাখকে ঘিরে যে ইলিশ সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা উচ্চবিত্তের তামাশা ছাড়া আর কিছুই না। দেশে বেসরকারি টেলিভিশন ও পত্রিকার প্রাবল্যের পর থেকে মূলত পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এই ধারণা ও ফ্যাশন শুরুর পেছনে মিডিয়া একটি ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্ট পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে পান্তা ইলিশ নিয়ে নানা রকম অফার এই অপসংস্কৃতিকে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে।

বৈশাখ প্রকৃত অর্থে খরার মাস। এ সময় কোনো ফসল ওঠে না। সাধারণ কৃষকের পক্ষে ইলিশ কিনে খাওয়ার মতো টাকাও থাকে না। ফলে পান্তার সঙ্গে ইলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে গ্রাম বাংলায় পহেলা বৈশাখের আয়োজনে থাকত আগের দিন ভিজিয়ে রাখা ভাত। যে ভাতের পানি কৃষক খেতেন এবং মঙ্গলের জন্য কিষানির শরীরে ছিটিয়ে দিতেন। তারা পান্তা ভাত খেতেন কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ, শুঁটকি ভর্তা, বেগুন ভর্তা এসব দিয়ে।

বাংলাদেশে নদী-জল-আবহাওয়ার কারণে বাংলাদেশের ইলিশের খ্যাতি জগৎজোড়া। কিন্তু পহেলা বৈশাখের সাথে ইলিশ এর দূরতম সম্পর্ক কোথাও পাওয়া যায়নি। কাজেই এখন এই কৃত্রিম ফ্যাশনটিকে পরিহার করতে হবে। পান্তা ইলিশ পহেলা বৈশাখ তথা আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। আর এই পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে জাটকা থেকে মা ইলিশ নিধনের যে প্রতিযোগিতা শুরু হয় তা অচিরেই বন্ধ করতে হবে।

বৈশাখ মাসে ইলিশ খাওয়ার মধ্য দিয়ে সারা বছরের ইলিশ উৎপাদনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এখন ইলিশের বড় হওয়ার মৌসুম। জাটকা সংরক্ষণের জন্য ১লা মার্চ থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব নদীতে ইলিশ ধরা, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এমনকি গত দুই বছর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে ইলিশ ছিল না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বৈশাখে ইলিশের পরিবর্তে শুঁটকি, সবজি, খিচুড়ি ইত্যাদি খেয়ে পহেলা বৈশাখ পালনের আহবান জানিয়েছেন।

মতিহার বার্তা ডট কম  ১৪ এপ্রিল ২০১৯

 

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply